গল্পঃ অরণ্য রাজ্যের রাজকুমারী
লেখকঃ Jubayer Hosen Jr.
প্রথমে যদিও আমি না বলি ।কিন্তু কে শোনে কার কথা ?শনিবার বিকেলে গিয়ে উঠি বাসায় ।সারারাত জেগে ঘরের আসবাব পত্র গুছিয়ে ঘুমালাম ভোর ৪ টার সময় ।
কি আর ঘুম সকাল ৮টা বাজতেই ডেকে তুলল বাবা ।যদিও একটু রাগই হচ্ছিল ।তবুও উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে বসলাম জানালার ধারে ।
ফেসবুকে কালকের লেখার কমেন্ট গুলো দেখছিলাম ।হঠাত্ চোখ যায় রাস্তার দিকে ।হেটে যাচ্ছিল একটা মেয়ে । আহ্ কি সুন্দর যেন অরণ্য রাজ্যর রাজকুমারি ।
মনে মনে বাবাকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলাম ।কারণ এখানে না এলে এত সুন্দর মেয়েকে দেখতে পেতাম না ।
বুঝতেই পারছেন মেয়েটির প্রেমে পরে গেছি ।এক দৌড়ে বাসা থেকে বেড় হয়ে আসলাম,মেয়েটির সাথে কথা বলতে ।
--যা কোথায় গেল ?
এক রাস্তা থেকে কয়েকটি রাস্তার মোড় ।কোন দিকে গেল বুঝতে পারলাম না ।মনে মনে গালি দিচ্ছিলাম আর বলছিলাম শালা রাস্তা না হরিনাথের গলি ।
ফিরে আসলাম বাসায় ।আসতেই
আম্মু বললঃ
--কিরে দৌড়ে কোথায় গিয়েছিল ?
--না ঐ একটু বাইরে ।
কথাটা শুনে চলে গেল আম্মু ।
--ও বাবা বাঁচলাম !বুঝতে পারেনি ।
ফ্রেশ হয়ে রওনা দিলাম কলেজে ।কলেজ টাও নতুন কালকেই ভর্তি হলাম ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষে ।তাই আজ শুধু একটু পাইতাঁরা দিয়ে চলে আসলাম ।
বিকেলে বের হলাম বাসা থেকে একটু বেড়ানোর উদ্দেশে ।আর পাশেই খেলের একটা ছোট মাঠ থাকেতে ঐখানে গেলাম ।খেলতে নয় খেলা দেখতে ।
কাউকে চিনিনা তো কি ?বন্ধু হতে সময় লাগে নাকি ?দুইজনের সাথে পরিচয় হয়ে গেল ।একটু ঘুরাঘুরি করে বাসায় চলে আসলাম ।
রাতের কাজ সেরে আবার ঘুম ।আজ আর ডাকতে হল না ।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে দাড়ালাম জানালার কাছে ।যদি মেয়েটি আসে তাই ?
হায় আল্লাহ !আজকেও আসছে ।আর প্রতিদিন আসবে কারণ, বোঝার বাকি থাকলনা সে এই পথে প্রাইভেট পড়তে যায় ।
আজ আর আমাকে কে ঠেকায় ?দৌড়ে গিয়ে পাশাপাশি দাড়িয়ে হাঁটতে শুরু করলাম ।বুঝাতে চাচ্ছিলাম আমার মনের আবেগ ।কিন্তু বলতে সাহস হচ্ছিল না ।
যে ভাবে তাকাচ্ছিল যেন আমাকে চিবিয়ে খাবে ।আর এই রকম দৃষ্টিতে তাকানোই স্বাভাবিক ।কিন্তু ,দেখতে যা লাগছিল বলে বোঝাতে পারব না ।
পাশাপাশি গেলাম এবং দেখলাম কোখায় পড়ে ।তারপর মনের আনান্দে বাসায় চলে আসলাম কলেজে যাব বলে ।
প্রায় দেড় ঘন্টা পর বাসা থেকে বের হলাম কলেজের উদ্দেশে ।হায় হায় !মেয়েটি আবার বাসার দিকে যাচ্ছে ।কিসের কলেজ? রওনা দিলাম পিছু পিছু ।বাসাটা কোথায় দেখব বলে ।
মেয়েটি বার বার রেগে রেগে তাকাচ্ছিল ।রাগবারই কথা যাওয়ার সময়ও পিছু নিলাম আবার এখনও পিছু নিচ্ছি ।মেয়েটি রাস্তায় হঠাত্ দাড়াল
--কি বেপার আপনি আমার পিছু নিচ্ছেন কেন ?
--না মানে ইয়ে ।আপনার নামটা কি?(ভয়ে ভয়ে)
--পাখি ।কেন কি হয়েছে,আমার পিছু পিছু আসছেন কেন ?
--না কিছু না ।
বলেই চলে আসলাম ।মনে মনে বলছিলাম অরণ্যের রাজকুমারী পাখি ।বাহ্ দারুন নাম তো ।
কয়েক দিন এই ভাবে চলে যায় ।এখন আর আগের মত ঐভাবে তাকায় না ।সময় সময় আমার কার্যকলাপ দেখে মুচকি মুচকি হাসে ।বুঝলাম ওও আমার বিষয়টা বুঝে গেছে আর আমার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে ।
আর না আজ বলবই ।কারণ, যেটুকু জানলাম সে অনেক ভাল মেয়ে ।কারো সাথে খারপ কোন সম্পর্কে নেই ।
সকালে রাস্তার পাশের এক দোকান থেকে একটা গোলাপ ফুল কিনলাম ।দাড়িয়ে আছি রাস্তায় ।তবুও টেনশনে শরীরটা ঘাম দিয়ে আসছিল ।
পাখি আসতেই পিছু পিছু হাঁটতে থাকি ।আজ অবশ্য তাকেও রোমেন্স লাগছিল ।আর দেড়ি না সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে দিয়ে বসে একদমে বলি,- আই লাভ ইউ ।হাতের ফুলটা বারিয়ে দিই পাখির দিকে ।
কিছুক্ষণ নিরব থেকে হাত থেকে ফুলটা গ্রহণ করে পাখি ।হায় হায় ! ফুলটা নিয়েই একদৌড় ।চুপি চুপি কানের কাছে বলে যায় আই লাভ ইউ টু ।
আমি রাস্তা দাড়িয়ে জোর গলায় চেচিয়ে বলতে থাকি আই লাভ ইউ পাখি ।আই লাভ ইউ ।তুমিই আমার অরণ্য রাজ্যার রাজকুমারী পাখি.....
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন